রিকন্ডিশন গাড়ির দাম : রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন? বাংলাদেশের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার, টয়োটা, হোন্ডা, নিশানসহ সেরা মডেলগুলোর দাম, রিকন্ডিশন গাড়ির দাম, ফিচার, রিভিউ, চূড়ান্ত ক্রেতা সহায়িকা ও তুলনা নিয়ে বিস্তারিত গাইড পেতে পড়ুন।
রিকন্ডিশন গাড়ির দাম
রিকন্ডিশন্ড গাড়ি হলো বিদেশে ব্যবহৃত, তবে অপেক্ষাকৃত কম চালিত ও ভালো অবস্থার গাড়ি যা বাংলাদেশে আমদানি করে নতুনের মতো করে বিক্রি করা হয়। মূলত জাপান থেকে আসা এই গাড়িগুলো নির্ভরযোগ্যতা, দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রাংশ, কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এবং ভালো পুনঃবিক্রয় মূল্যের কারণে বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেশের নতুন নিবন্ধিত গাড়ির প্রায় ৮২ শতাংশই রিকন্ডিশন্ড।
কেন রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ওপর বাংলাদেশিদের এত আস্থা?
বাংলাদেশে গাড়ি কেনার কথা ভাবলে বেশিরভাগ মানুষের মনে প্রথম যে শব্দটি আসে, তা হলো ‘রিকন্ডিশন্ড’। ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির শোরুমের চাকচিক্যের চেয়েও সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বন্দর থেকে আসা জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আকর্ষণ অনেক বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের রাস্তায় নতুন নিবন্ধিত গাড়ির প্রায় ৮২ শতাংশই রিকন্ডিশন্ড, যার ৯৫ শতাংশই আসে জাপান থেকে।
কিন্তু কেন এই বিপুল জনপ্রিয়তা? শুধু দাম কম বলেই কি? নাকি এর পেছনে রয়েছে আস্থা, নির্ভরযোগ্যতা আর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার গল্প? এই পিলার পোস্টে আমরা বাংলাদেশের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারের গভীর থেকে খুঁটিনাটি, রিকন্ডিশন গাড়ির দাম, রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারসহ সবকিছু তুলে ধরব। এটি শুধু একটি আর্টিকেল নয়, এটি আপনার জন্য একটি সম্পূর্ণ বায়ার্স গাইড যা আপনাকে স্বপ্নের গাড়িটি বেছে নিতে প্রতিটি পদক্ষেপে সাহায্য।
রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কী?
সহজ কথায়, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বলতে বিদেশে (প্রধানত জাপানে) ব্যবহৃত এমন গাড়িকে বোঝায় যা সেখানকার কঠোর রোড রেজিস্ট্রেশন নিয়মের (“Shaken” system) কারণে অল্প ব্যবহারের পরই বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই প্রায় নতুন গাড়িগুলো বাংলাদেশে আমদানি করে, প্রয়োজনীয় সার্ভিসিং বা ছোটখাটো মেরামত করে ‘almost new’ বা ‘like new’ কন্ডিশনে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
আশির দশকের শেষে সরকারি নীতিমালার হাত ধরে বাংলাদেশে JDM (Japanese Domestic Market) গাড়ির প্রবেশ শুরু হয়। তবে এর বাণিজ্যিক উত্থান ঘটে ১৯৯৬ সালের পর থেকে, যখন সরকার কর সুবিধা এবং নির্দিষ্ট বয়সসীমার শর্তারোপ করে। এরপর থেকে টয়োটা, হোন্ডা, নিশানের মতো ব্র্যান্ডগুলো তাদের দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রাংশ, নিরবচ্ছিন্ন সেবা এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচের কারণে দ্রুতই দেশের মধ্যবিত্তের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়।
জনপ্রিয়তার মূল কারণ
- নির্ভরযোগ্যতা ও দীর্ঘস্থায়িত্ব: জাপানি গাড়িগুলো বছরের পর বছর ঝামেলাবিহীন চলার জন্য বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
- কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ: এর যন্ত্রাংশ সহজলভ্য এবং সার্ভিসিং খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
- উন্নত ফিচার: ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির তুলনায় অনেক কম দামে আধুনিক এবং উন্নত ফিচারের গাড়ি পাওয়া যায়।
- শক্তিশালী পুনঃবিক্রয় মূল্য (Resale Value): কয়েক বছর ব্যবহার করার পরেও এই গাড়িগুলো প্রায় কাছাকাছি দামে আবার বিক্রি করা যায়, যা মালিকের জন্য আর্থিকভাবে লাভজনক।
- প্রচুর অপশন: কমপ্যাক্ট সেডান, হ্যাচবেক, ক্রসওভার, এসইউভি, এমপিভি—সব বিভাগেই জাপানি গাড়ির একাধিক জনপ্রিয় মডেল রয়েছে।
ক্রেতার অবশ্য পালনীয়: ঝুঁকি সনাক্তকরণ এবং এড়ানোর উপায়
রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার যতটা আকর্ষণীয়, ততটাই ঝুঁকিপূর্ণ যদি আপনি সতর্ক না হন।
- অকশন শিট যাচাই: এটি আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। ডিলারের দেখানো অকশন শিটের সাথে অনলাইনে চেসিস নম্বর দিয়ে ভেরিফাই করে নিন। এটি গাড়ির আসল গ্রেড, মাইলেজ এবং দুর্ঘটনার ইতিহাস বলে দেবে।
- মিটার টেম্পারিং: এটি একটি সাধারণ প্রতারণা। অকশন শিটের সাথে গাড়ির ওডোমিটারের রিডিং মিলিয়ে নিন। অস্বাভাবিক কম মাইলেজ দেখলে সন্দেহ করুন।
- অভিজ্ঞ মেকানিকের সাহায্য: গাড়ি চূড়ান্ত করার আগে একজন বিশ্বস্ত এবং অভিজ্ঞ মেকানিক দিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা করিয়ে নিন।
সেগমেন্ট অনুযায়ী সেরা গাড়ির বিশ্লেষণ: আপনার জন্য কোনটি?
চলুন, বাজেট এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সেগমেন্টের সেরা এবং জনপ্রিয় মডেলগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা যাক।
কমপ্যাক্ট হ্যাচব্যাক: শহরের সেরা পছন্দ
ব্যস্ত শহরের রাস্তায় চালানো, সহজে পার্কিং এবং সর্বোচ্চ মাইলেজের জন্য এই সেগমেন্টের গাড়িগুলো সেরা।
Toyota Aqua: ‘মাইলেজ কিং’
টয়োটা অ্যাকুয়া নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় হাইব্রিড হ্যাচব্যাক। এর প্রধান আকর্ষণ হলো অবিশ্বাস্য জ্বালানি সাশ্রয়।
- ইঞ্জিন: ১.৫ লিটার ডিওএইচসি ভিভিটি-আই হাইব্রিড।
- লেটেস্ট মডেল (২০২১+): দ্বিতীয় প্রজন্মের (XP210) অ্যাকুয়া ডিজাইনে এবং প্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। এতে বিশ্বের প্রথম উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বাইপোলার নিকেল-মেটাল হাইড্রাইড ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা পারফরম্যান্স দ্বিগুণ করে। হুইলবেস ৫০ মিমি বাড়ানোর ফলে পেছনের যাত্রীদের জন্য জায়গা বেড়েছে।
- ফিচার: ১০.৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে, টয়োটা সেফটি সেন্স, কমফোর্ট প্যাডেল, পুশ স্টার্ট, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা।
- দাম: ২০১৯-২০২৫ মডেল, প্যাকেজ ও গ্রেড ভেদে ১৮ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা।
Honda Fit: স্টাইলিশ পারফর্মার
যারা শুধু মাইলেজ নয়, সাথে স্টাইল এবং ড্রাইভিং প্লেজারও চান, তাদের জন্য হোন্ডা ফিট একটি চমৎকার বিকল্প।
- ইঞ্জিন: ১.৫ লিটার ডিওএইচসি আই-ভিটেক হাইব্রিড ইঞ্জিন ও সিভিটি ট্রান্সমিশন।
- মাইলেজ: শহরে প্রতি লিটারে ১৫-২০ কিমি এবং হাইওয়েতে ২৫-৩৫ কিমি।
- ফিচার: হোন্ডা সেন্সিং সেফটি প্যাকেজ, প্রশস্ত ৩৫৪ লিটার বুট স্পেস, আধুনিক ইন্টেরিয়র।
- দাম: ২০১৭-২০২০ মডেল, প্যাকেজ ভেদে ১৮ লক্ষ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
এক নজরে অ্যাকুয়া বনাম ফিট
সেডান: পারিবারিক আরাম ও নির্ভরতার প্রতীক
বাংলাদেশের রাস্তায় সেডান গাড়িগুলোর আবেদন চিরন্তন। পরিবার নিয়ে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য এগুলোই সেরা।
Toyota Axio: মধ্যবিত্তের বিশ্বস্ত সঙ্গী
এক্স করোলা মডেলের পর টয়োটার সবচেয়ে সফল এবং জনপ্রিয় সেডান হলো এক্সিও।
- ইঞ্জিন: ১.৫ লিটার (হাইব্রিড ও নন-হাইব্রিড উভয়ই পাওয়া যায়)। ১৫০০ সিসি হওয়ায় অগ্রিম আয়কর কম।
- জনপ্রিয়তা: ২০১২ সালের হাইব্রিড (NKE165) মডেলটি জ্বালানি সাশ্রয়ী হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত হয়। এর ফিল্ডার (হ্যাচবেক) সংস্করণটিও প্রশস্ত জায়গার জন্য জনপ্রিয়।
- ফিচার: মডেল ও প্যাকেজভেদে আধুনিক সব ফিচার, যেমন পুশ স্টার্ট, ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি পাওয়া যায়।
- দাম: ২২ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার মধ্যে।
Honda Grace: ফিচার-প্যাকড প্রতিদ্বন্দ্বী
টয়োটা এক্সিওর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হোন্ডা গ্রেস ফিচার এবং প্রযুক্তির দিক থেকে অনেকাংশেই এগিয়ে।
- ইঞ্জিন: ১.৫ লিটার হাইব্রিড (১১০ অশ্বশক্তি + ২৯ অশ্বশক্তি বৈদ্যুতিক মোটর)।
- ট্রান্সমিশন: ডুয়েল-ক্লাচ ট্রান্সমিশন (DCT), যা নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
- ফিচার: স্মার্ট কি, পুশ স্টার্ট, টাচস্ক্রিন, হোন্ডা সেন্সিং, অটো ব্রেক হোল্ড, বৈদ্যুতিক পার্কিং ব্রেক, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, ডুয়াল জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল।
- দাম: এক্সিওর সমসাময়িক।
কিংবদন্তীর বিদায়: Toyota Premio/Allion-এর চাহিদা এখনো কেন?
২০০১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত টয়োটা প্রিমিও এবং এলিয়ন ছিল বাংলাদেশের সেডান বাজারের একচ্ছত্র অধিপতি। উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও এদের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা এবং নির্ভরযোগ্যতার কারণে ২০২১ মডেলের ৫ গ্রেডের একটি গাড়ির দাম এখনো প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
ক্রসওভার ও কমপ্যাক্ট SUV: স্টাইল ও ইউটিলিটির মিশ্রণ
যারা সেডানের আরাম এবং SUV-এর মতো উঁচু গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স চান, তাদের জন্য ক্রসওভার সেগমেন্ট।
Honda Vezel: বাজারের হটকেক
সাধ্যের মধ্যে আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং ভালো গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সের জন্য হোন্ডা ভেজেল অত্যন্ত জনপ্রিয়।
- ইঞ্জিন: ১.৮ লিটার হাইব্রিড।
- ফিচার: হোন্ডা সেন্সিং, অটো হোল্ড, লেন কিপিং অ্যাসিস্ট, অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল। ২০২১ সাল থেকে দ্বিতীয় প্রজন্মের মডেল পাওয়া যাচ্ছে যা আরও আকর্ষণীয়।
- দাম: ২০২১ পর্যন্ত মডেলগুলো ২৫ থেকে ২৮ লক্ষের মধ্যে থাকলেও, ২০২৪ মডেলের দাম ৪০ লক্ষ টাকার বেশি।
Toyota C-HR: ফিউচারিস্টিক ডিজাইন
তরুণ এবং শহুরে ক্রেতাদের কাছে এর ভবিষ্যৎমুখী এবং ডাইনামিক ডিজাইনের জন্য সি-এইচআর (কুপ হাই রাইডার) ব্যাপক জনপ্রিয়।
- ইঞ্জিন: ১.৮ লিটার হাইব্রিড অথবা ১.২ লিটার টার্বো (নন-হাইব্রিড)। ২০২৩ পরবর্তী মডেলে ২ লিটার হাইব্রিড এবং ই-ফোর (AWD) সিস্টেমও রয়েছে।
- প্ল্যাটফর্ম: টয়োটা নিউ গ্লোবাল আর্কিটেকচার (TNGA) প্ল্যাটফর্মে তৈরি হওয়ায় এর ড্রাইভিং ডাইনামিকস চমৎকার।
- দাম: প্যাকেজ ও গ্রেড ভেদে ৩৩ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা।
Toyota Corolla Cross: নতুন সেনসেশন
২০২০ সালে বাজারে আসা করোলা ক্রস খুব দ্রুতই মধ্যম বাজেটের SUV ক্রেতাদের মন জয় করেছে।
- ইঞ্জিন: ১.৮ লিটার হাইব্রিড।
- আবেদন: যারা সাশ্রয়ী মূল্যে একটি নির্ভরযোগ্য হাইব্রিড SUV-এর অভিজ্ঞতা চান, তাদের জন্য এটি প্রথম পছন্দ।
- ফিচার: সানরুফ, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, ক্লাইমেট কন্ট্রোল, টয়োটা সেফটি সেন্স, ওয়্যারলেস চার্জিং, লেন কিপিং অ্যাসিস্ট, ব্লাইন্ড স্পট মনিটর।
- দাম: প্যাকেজ ও অবস্থা ভেদে ৪০ লক্ষ থেকে ৫৫ লক্ষ টাকা।
মাল্টি-পারপাস ভেহিকল (MPV): সবার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা
বড় পরিবার বা বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য এমপিভি বা মাইক্রোবাসের কোনো বিকল্প নেই।
Toyota Noah/Voxy/Esquire: দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাইক্রোবাস
এই তিনটি মডেল ডিজাইন এবং ফিচারে কিছুটা ভিন্ন হলেও ইঞ্জিন এবং প্ল্যাটফর্ম একই।
- ইঞ্জিন: ২.০ লিটার (হাইব্রিড ও নন-হাইব্রিড)।
- ব্যবহার: ৭ বা ৮ আসনের এই গাড়িগুলো পারিবারিক এবং বাণিজ্যিক উভয় কাজেই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
- ফিচার (লেটেস্ট মডেল): স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোর, ক্যাপ্টেন সিট, স্বয়ংক্রিয় পার্কিং সিস্টেম, অটোমেটিক টেইলগেট।
- দাম: ৩৭ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
Toyota Alphard/Vellfire: বিলাসবহুলতার চূড়ান্ত
এগুলো শুধু এমপিভি নয়, এগুলো ‘রাস্তার প্রিমিয়াম লাউঞ্জ’।
- ব্যবহারকারী: কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং অভিজাত ব্যবহারকারীদের প্রথম পছন্দ।
- ইঞ্জিন: ২.৫ লিটার (হাইব্রিড/পেট্রল) এবং ৩.৫ লিটার (V6)।
- ফিচার: এক্সিকিউটিভ লাউঞ্জ প্যাকেজে ক্যাপ্টেন সিট, তিন-জোনের ক্লাইমেট কন্ট্রোল, জেবিএল অডিও, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোলসহ সব ধরনের প্রিমিয়াম ফিচার রয়েছে।
- দাম: ১ কোটি ১০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
মিড-সাইজ SUV: শক্তি ও আভিজাত্যের সমন্বয়
এই সেগমেন্টের গাড়িগুলো শহরের রাস্তার পাশাপাশি হাইওয়ে এবং অফ-রোডেও সমান পারদর্শী।
Toyota Harrier: প্রিমিয়াম এবং এলিগ্যান্ট ডিজাইন, টয়োটার নির্ভরযোগ্যতা। দাম ৬৫ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা।
Mitsubishi Outlander: সুন্দর ডিজাইন, ৭ আসনের অপশন এবং PHEV (প্লাগ-ইন হাইব্রিড) সংস্করণের জন্য জনপ্রিয়। দাম ৭০ লক্ষ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা।
Nissan X-Trail: পারদর্শী একটি SUV, যাতে রয়েছে e-Power হাইব্রিড সিস্টেম এবং ফোর হুইল ড্রাইভ। দাম ৩০ লক্ষ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা।
Honda CR-V: বিশ্বজুড়ে সমাদৃত একটি মডেল যা নির্ভরযোগ্যতা এবং আরামের জন্য পরিচিত। দাম ৪০ লক্ষ থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা।
লাক্সারি SUV: ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ
Toyota Land Cruiser Prado: অবিসংবাদিত রাজা
বাংলাদেশের রাস্তায় প্রতিপত্তি, টেকসই নির্মাণ এবং যেকোনো পথে দাপটের সঙ্গে চলার ক্ষমতার চূড়ান্ত প্রতীক হলো প্রাডো।
- ইঞ্জিন: ২.৭ লিটার পেট্রল, ২.৮ লিটার টার্বো ডিজেল এবং ৪.০ লিটার V6 পেট্রল।
- ফিচার: ক্রল কন্ট্রোল, केডিএসএস সাসপেনশন, মাল্টি-টেরেইন সিলেক্ট, জেবিএল সাউন্ড, ব্লাইন্ড স্পট মনিটর।
- দাম: ১ কোটি ৩০ লক্ষ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত।
আর্থিক পরিকল্পনা: গাড়ির দামের বাইরের হিসাব
গাড়ি কেনা মানে শুধু গাড়ির দাম পরিশোধ করা নয়। এর সাথে আরও অনেক খরচ জড়িত।
- অন্যান্য খরচ: রেজিস্ট্রেশন ফি, অগ্রিম আয়কর, ফিটনেস ফি ইত্যাদি গাড়ির দামের সাথে যুক্ত হবে।
- অটো লোন (Auto Loan): গাড়ি কেনার জন্য লোনের প্রয়োজন হলে বিভিন্ন ব্যাংকের auto loan rates এবং প্রসেসিং ফি তুলনা করুন। ০.৫% সুদের পার্থক্যও দীর্ঘমেয়াদে বড় অংকের টাকা বাঁচিয়ে দিতে পারে।
- গাড়ি বীমা (Car Insurance): আইন অনুযায়ী থার্ড-পার্টি ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক হলেও, আপনার মূল্যবান বিনিয়োগকে সুরক্ষিত রাখতে ফার্স্ট-পার্টি car insurance করা অত্যন্ত জরুরি। এটি দুর্ঘটনা, চুরি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপনার আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দেবে।
সরকারি নীতিমালা এবং বাজারের ভবিষ্যৎ
বর্তমানে জাপান থেকে ৫ বছরের মধ্যে ব্যবহৃত গাড়ি আমদানির অনুমতি রয়েছে। ইঞ্জিন ক্ষমতা এবং মডেলের ওপর ভিত্তি করে আমদানি শুল্ক ১২০% থেকে ৩০০% পর্যন্ত হতে পারে। সরকার হাইব্রিড এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর কিছু করছাড় দিলেও তা এখনো সীমিত। প্রস্তাবিত ‘ইভি নীতিমালা ২০২১’ বাস্তবায়িত হলে এবং EV charging plans সহজলভ্য হলে ভবিষ্যতে এই বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার জন্য সঠিক রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কোনটি?
রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বাংলাদেশের মধ্যবিত্তের স্বপ্নপূরণের এক অসাধারণ মাধ্যম। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে, একজন নির্ভরযোগ্য ডিলারের কাছ থেকে কিনলে এটি হতে পারে আপনার জীবনের সেরা বিনিয়োগগুলোর একটি। আপনার বাজেট, পারিবারিক প্রয়োজন, এবং ব্যবহারের ধরণ অনুযায়ী এই গাইড থেকে একটি মডেল বেছে নিন এবং একজন অভিজ্ঞ মেকানিক দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আপনার স্বপ্নের গাড়ির মালিক হয়ে উঠুন।
রিকন্ডিশন গাড়ির দাম এবং রিকন্ডিশন গাড়ির বাজার নিয়ে এই বিস্তারিত গাইডটি আপনার কেমন লাগলো? কোন মডেলটি আপনার সবচেয়ে পছন্দের? নিচে কমেন্টে আমাদের জানান।
অটোমোবাইল থেকে আরও: গাড়ি কিনেছেন? মালিকানার প্রথম দিন থেকেই যে ১০টি ভুল এড়িয়ে চলবেন!
1 thought on “রিকন্ডিশন গাড়ি কিনবেন? দেশের সেরা ৩০টি মডেলের রিভিউ, দাম ও তুলনা”